Friday, July 3, 2020

চীন - ভারত | সামরিক শক্তিতে কে কতটা এগিয়ে | China vs India Military Powe...



১৯৬২ সালে সীমানা নিয়ে প্রথম ভারতচীনের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সীমানা নিয়ে বিরোধ থেকেই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। সেই যুদ্ধে ভারত শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছিল। চীন তিব্বত দখল করার পর ভারতের বর্তমান অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই চীনকে চীনের অন্তর্ভুক্ত এলাকা বলে দাবী করে, এভাবে যে সীমান্ত সমস্যার শুরু হয় তা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের সূচনা করে। অন্যদিকে পাকিস্তান চীনের সঙ্গে মিত্রতা বাড়াতে সচেষ্ট হয়।

ভারত-চীন সীমান্ত চলমান সমস্যা নতুন নয়। চীনের দাবি অনুযায়ী ভারতের সঙ্গে তাদের যে সীমান্তরেখা, তাতে অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখের কিছু অংশ তৎকালীন চীন সাম্রাজ্যের অংশ। 

সম্প্রতি ভারতের লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা ও চীনের আকসাই সীমান্তে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুদেশের সেনারা। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৬২ সালে একই জায়গায় ভারত চীন ভয়াবহ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। যদিও এর প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন।

বর্তমানে চীনের জনসংখ্যা প্রায় ১৩৯ কোটি এবং ভারতের ১২৯ কোটি। ভারতের সেনাসদস্য আছে প্রায় ৩৫ লাখ আর চীনের রয়েছে প্রায় ২৬ লাখ। এদিক থেকে ভারত এগিয়ে। তবে সামরিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পরেই চীনের অবস্থান। এরপরই আছে ভারত।

সামরিক ব্যয়ের দিক দিয়ে চীনের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। তাদের বার্ষিক সামরিক ব্যয় ২৬১০০ কোটি ডলার এবং ভারতের ব্যয় ৭১১০ কোটি ডলার। যা ভারতের ব্যয়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। যুদ্ধবিমানের শক্তির দিক থেকেও চীন ভারতের একধাপ উপরে। তাদের কাছে আছে ৩২১০টি যুদ্ধবিমান, ভারতের আছে ২১২৩টি। চীনের ব্যবহার উপযোগী ৫০৭টি বিমানবন্দর থাকলেও ভারতের আছে ৩৪৬টি।

চীনের ফাইটার বিমান আছে ১২৩২টি, ভারতের ৫৩৮টি। চীনের হেলিকপ্টার ৯১১টি, ভারতের আছে ৭২২টি। আক্রমণকারী হেলিকপ্টার চীনের ২৮১টি, ভারতের ২৩টি। চীনের ৩৫০০টি ট্যাঙ্ক থাকলেও, এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ভারত। ভারতের ট্যাঙ্কের সংখ্যা ৪২৯২।

অন্যদিকে চীনের ৩৩ হাজার সাজোয়া যান আছে। ভারত এক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে। তাদের আছে ৮৬৮৬টি সাজোয়া যান। চীনের সক্রিয় আর্টিলারি ৩৮০০, ভারতের আছে মাত্র ২৩৫। উপকূলীয় টহলে চীনের ২২০টি দল থাকলেও ভারতের আছে ১৩৯টি দল। চীনের রকেট উৎক্ষেপক আছে ২৬৫০টি কিন্তু ভারতের আছে মাত্র ২৬৬টি। ভারি যুদ্ধ জাহাজ চীনের ২টি থাকলেও ভারতের আছে ১টি। চীনের রণতরী আছে ৫২টি, ভারতের ১০টি। চীনের বিশেষ রণতরী আছে ৫০টি, ভারতের ১৯টি। চীনের সাবমেরিন আছে ৭৪টি, ভারতের আছে ১৬টি।

চীন ১৯৬৪ সালে ও ভারত ১৯৭৪ সালে পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তালিকায় নাম লেখায়। চীনের ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ভারতের প্রায় দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। চীনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র আছে প্রায় ৩২০টি। কিন্তু ভারতে আছে মাত্র ১৫০টি। চীন তাদের অস্ত্রাগারে নতুন ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র যোগ করলেও ভারত করেছে মাত্র ১০টি।

চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স (পিএলএএফ) লাদাখ অঞ্চলে যে আটটি ঘাঁটি গড়ে তুলেছে এর বেশিরভাগই এতো উচ্চতায় রয়েছে তা বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। গালাওয়ান অঞ্চলে প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় স্থলবাহিনীর বিপরীতে চীনের রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজারের মতো সদস্য। তবে ক্রমেই দুই দেশ ওই অঞ্চলে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে।

এবার চলুন জেনে নিই কোন দুইটি অস্ত্রের কারনে চীন সামরিক শক্তিতে সবার থেকে এগিয়ে। যা শুধু ভারত নয় অন্য যেকোনো দেশের জন্যই মারাত্মক ভয়ের কারণ হতে পারে।

যুদ্ধবিমানে স্থাপন করা হাইপারসনিক স্পিড সংবলিত অস্ত্র। এটি শব্দের পাঁচগুণ গতিতে গুলি ছুড়তে পারে। অনেকদিন ধরেই বিশ্বের অনেক দেশ এমন অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করলেও চীন এক্ষেত্রে সফল হয়েছে। রেলগান নামের এই অস্ত্রটি সেকেন্ডে আড়াই কিলোমিটার গতিতে গুলি ছুড়তে পারে এবং দুইশ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। চীনের ২য় অস্ত্র হাইপারসনিক বিমান। যা বিশ্বের যেকোনো মিসাইল প্রতিরক্ষা ফাঁকি দিতে সক্ষম। সার্বিক দিক বিবেচনায় সামরিক শক্তিতে চীন এগিয়ে থাকলেও কৌশলগত কারণে এগিয়ে আছে ভারত।

0 comentários:

Post a Comment

Feature Post