বাংলায় বর্গী আগমনের ইতিহাস | History of Bargi in Bangla
অষ্টাদশ শতাব্দীর লুটতরাজপ্রিয়
অশ্বারোহী মারাঠা সৈন্যদলের নাম ছিল ‘বর্গি’। ১৭৪১ থেকে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পশ্চিম বাংলার
নানা স্থানে প্রতি বছর প্রায় নিয়মকরেই মারাঠাদের কিছু সংঘবদ্ধ লুটেরা এদেশে এসে লুটপাট
করতো। খেতের ফসল লুট করে নিতো, ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিতো, হত্যা করতো নিরীহ মানুষ। এইসব
লুটেরাদেরকেই বাংলার মানুষ বর্গী বলে ডাকতো। বর্গি শব্দটা এসেছে ফারসি ‘বারগিস’ থেকে, যেটার অর্থ ‘প্রাচীন মারাঠা যোদ্ধা’।
অশ্বারোহী মারাঠা সৈন্যদলের নাম ছিল ‘বর্গি’। ১৭৪১ থেকে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পশ্চিম বাংলার
নানা স্থানে প্রতি বছর প্রায় নিয়মকরেই মারাঠাদের কিছু সংঘবদ্ধ লুটেরা এদেশে এসে লুটপাট
করতো। খেতের ফসল লুট করে নিতো, ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিতো, হত্যা করতো নিরীহ মানুষ। এইসব
লুটেরাদেরকেই বাংলার মানুষ বর্গী বলে ডাকতো। বর্গি শব্দটা এসেছে ফারসি ‘বারগিস’ থেকে, যেটার অর্থ ‘প্রাচীন মারাঠা যোদ্ধা’।
তখন বাংলায় চলছে আলিবর্দি
খাঁর যুগ। আলিবর্দি খাঁ ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানা। খাঁ সাহেবের
রাজত্বে বাংলার মানুষের অভাব থাকলেও অশান্তি ছিল না তেমন। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই বাংলার
আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা! হঠাৎ একদল লুটেরার উৎপাত শুরু হয়ে গেল মুর্শিদাবাদের গ্রামগুলোতে।
রাতের আঁধারে একদল লোক ঘোড়া টগবগিয়ে হানা দিতে থাকল। তারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে
দিতে থাকে, লোকজনকে মেরে সবকিছু কেড়ে নিতে থাকে। দোকানপাট সব তাদের অত্যাচারে বন্ধ
হয়ে গেল, মানুষজন ভয়ে ঘর থেকে বেরনো বন্ধ করে দিয়েছিল। শান্ত বাংলা যেন হঠাৎ করেই আতঙ্কের
বাংলা হয়ে উঠল। এই দুবৃর্ত্তরাই ছিল বর্গি। হাতে তাদের থাকত তীক্ষ্ণফলা বর্শা। মূলত
তারা ছিল মারাঠা যোদ্ধা। মারাঠাদের আসল নিবাস ভারতের মহারাষ্ট্র শহরে হলেও দক্ষিণ
ও পশ্চিম ভারতজুড়ে তারা ছড়িয়ে ছিল। আলিবর্দি খাঁ যখন বাংলার সিংহাসনে, সে সময় দিল্লির
তখতে ছিল মোগলরা। সে সময় এই মারাঠাদের যোদ্ধা হিসেবে নামডাক ছিল। পানিপথের তৃতীয়
যুদ্ধে মোগলদের সঙ্গে মারাঠাদের ভয়ংকর যুদ্ধ হয়েছিল। এই মারাঠাদের কিছু পথচ্যুত সেনাই
একসময় পরিচিত হয়ে যায় বর্গি নামে। ভারতজুড়ে তারা শুরু করে তাণ্ডব।
খাঁর যুগ। আলিবর্দি খাঁ ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানা। খাঁ সাহেবের
রাজত্বে বাংলার মানুষের অভাব থাকলেও অশান্তি ছিল না তেমন। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই বাংলার
আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা! হঠাৎ একদল লুটেরার উৎপাত শুরু হয়ে গেল মুর্শিদাবাদের গ্রামগুলোতে।
রাতের আঁধারে একদল লোক ঘোড়া টগবগিয়ে হানা দিতে থাকল। তারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে
দিতে থাকে, লোকজনকে মেরে সবকিছু কেড়ে নিতে থাকে। দোকানপাট সব তাদের অত্যাচারে বন্ধ
হয়ে গেল, মানুষজন ভয়ে ঘর থেকে বেরনো বন্ধ করে দিয়েছিল। শান্ত বাংলা যেন হঠাৎ করেই আতঙ্কের
বাংলা হয়ে উঠল। এই দুবৃর্ত্তরাই ছিল বর্গি। হাতে তাদের থাকত তীক্ষ্ণফলা বর্শা। মূলত
তারা ছিল মারাঠা যোদ্ধা। মারাঠাদের আসল নিবাস ভারতের মহারাষ্ট্র শহরে হলেও দক্ষিণ
ও পশ্চিম ভারতজুড়ে তারা ছড়িয়ে ছিল। আলিবর্দি খাঁ যখন বাংলার সিংহাসনে, সে সময় দিল্লির
তখতে ছিল মোগলরা। সে সময় এই মারাঠাদের যোদ্ধা হিসেবে নামডাক ছিল। পানিপথের তৃতীয়
যুদ্ধে মোগলদের সঙ্গে মারাঠাদের ভয়ংকর যুদ্ধ হয়েছিল। এই মারাঠাদের কিছু পথচ্যুত সেনাই
একসময় পরিচিত হয়ে যায় বর্গি নামে। ভারতজুড়ে তারা শুরু করে তাণ্ডব।
সেই তাণ্ডবের ঢেউ একসময়
বাংলায় এসে পৌছায়। তখন আলিবর্দি খাঁর শ্যালক রুস্তম জং ছিলেন উড়িষ্যার উপ-শাসক
অর্থাৎ নায়েবে আজম। কোন এক কারণে রুস্তম জং খাঁ সাহেবের কতৃর্ত্ব মেনে নিতে অস্বীকৃতি
জানান। তখনকার দিনে এ রকম বিদ্রোহ করলে যুদ্ধ ছিল অনিবার্য। শুরু হলো যুদ্ধ, সেই
যুদ্ধে রুস্তম জং খাঁ সাহেবের কাছে পরাজিত হলেন। আলিবর্দি খাঁ তাঁকে উপশাসকের পদ থেকে
সরিয়ে দিলেন। রুস্তম জং তখনকার মতো রণেভঙ্গ দিলেও সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। সেই সময়
নাগপুরের রাজা ছিলেন রঘুজিৎ ভোঁসলে। রুস্তম জং ভোঁসলেকে গিয়ে ধরলেন, উড়িষ্যা তার
ফেরত চাই-ই চাই। ভোঁসলের সাহায্যে রুস্তম জং আবার উড়িষ্যা দখল করলেন। কিন্তু রুস্তম
জং সিঙ্ঘাসনে টিকলেন না। আলিবর্দি খাঁ আবারও রুস্তমকে হারিয়ে উড়িষ্যা নিজের কব্জায়
নিয়ে নেন। এরই মধ্যে কিছু বিপথগামী মারাঠা সৈন্য এসে পড়েছে বাংলায়। সালটা ছিল
১৭৪২। তারা এসেই শুরু করে দারুণ অত্যাচার। নিরীহ মানুষজনকে ধরে ধরে মেরে ফেলতে থাকে।
এই বর্গিদের সর্দার ছিলেন ভাস্কর পণ্ডিত।
বাংলায় এসে পৌছায়। তখন আলিবর্দি খাঁর শ্যালক রুস্তম জং ছিলেন উড়িষ্যার উপ-শাসক
অর্থাৎ নায়েবে আজম। কোন এক কারণে রুস্তম জং খাঁ সাহেবের কতৃর্ত্ব মেনে নিতে অস্বীকৃতি
জানান। তখনকার দিনে এ রকম বিদ্রোহ করলে যুদ্ধ ছিল অনিবার্য। শুরু হলো যুদ্ধ, সেই
যুদ্ধে রুস্তম জং খাঁ সাহেবের কাছে পরাজিত হলেন। আলিবর্দি খাঁ তাঁকে উপশাসকের পদ থেকে
সরিয়ে দিলেন। রুস্তম জং তখনকার মতো রণেভঙ্গ দিলেও সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। সেই সময়
নাগপুরের রাজা ছিলেন রঘুজিৎ ভোঁসলে। রুস্তম জং ভোঁসলেকে গিয়ে ধরলেন, উড়িষ্যা তার
ফেরত চাই-ই চাই। ভোঁসলের সাহায্যে রুস্তম জং আবার উড়িষ্যা দখল করলেন। কিন্তু রুস্তম
জং সিঙ্ঘাসনে টিকলেন না। আলিবর্দি খাঁ আবারও রুস্তমকে হারিয়ে উড়িষ্যা নিজের কব্জায়
নিয়ে নেন। এরই মধ্যে কিছু বিপথগামী মারাঠা সৈন্য এসে পড়েছে বাংলায়। সালটা ছিল
১৭৪২। তারা এসেই শুরু করে দারুণ অত্যাচার। নিরীহ মানুষজনকে ধরে ধরে মেরে ফেলতে থাকে।
এই বর্গিদের সর্দার ছিলেন ভাস্কর পণ্ডিত।
আলিবর্দি খাঁ খবর পেলেন,
মুর্শিদাবাদে এ রকম বর্গিরা আক্রমণ করেছে। বর্গিদের ঠেকাতে সৈন্যসামন্ত নিয়ে চলে এলেন
নবাব। কিন্তু বর্গিরা ছিল ভীষণ দুর্ধর্ষ। নবাবের বাহিনীকে ঘিরে রেখে তারা সব রসদের
পথ বন্ধ করে দেয়। সেবার অনেক কষ্টে বর্গিদের হাত থেকে নিস্তার পান নবাব। তারা লুটতরাজ
চালিয়ে যেতে থাকে গ্রামে গ্রামে। আলিবর্দি খাঁ এবার সৈন্যসামন্ত বাড়িয়ে তাদের দেশছাড়া
করতে আসেন। কিন্তু বর্গিরাও এত সহজে পিছু হটার পাত্র নয়। মুর্শিদাবাদ থেকে তারা পালিয়ে
যায় দক্ষিণ হুগলিতে। সেখানে গিয়ে তারা নতুন করে আস্তানা গাড়ে। গ্রামবাসীর কাছ থেকে
জোর করে খাজনা আদায় করতে থাকে তারা।
মুর্শিদাবাদে এ রকম বর্গিরা আক্রমণ করেছে। বর্গিদের ঠেকাতে সৈন্যসামন্ত নিয়ে চলে এলেন
নবাব। কিন্তু বর্গিরা ছিল ভীষণ দুর্ধর্ষ। নবাবের বাহিনীকে ঘিরে রেখে তারা সব রসদের
পথ বন্ধ করে দেয়। সেবার অনেক কষ্টে বর্গিদের হাত থেকে নিস্তার পান নবাব। তারা লুটতরাজ
চালিয়ে যেতে থাকে গ্রামে গ্রামে। আলিবর্দি খাঁ এবার সৈন্যসামন্ত বাড়িয়ে তাদের দেশছাড়া
করতে আসেন। কিন্তু বর্গিরাও এত সহজে পিছু হটার পাত্র নয়। মুর্শিদাবাদ থেকে তারা পালিয়ে
যায় দক্ষিণ হুগলিতে। সেখানে গিয়ে তারা নতুন করে আস্তানা গাড়ে। গ্রামবাসীর কাছ থেকে
জোর করে খাজনা আদায় করতে থাকে তারা।
এদিকে ব্যবসা-বাণিজ্য তখন
লাটে ওঠার জোগাড়, মানুষ না খেতে পেয়ে মরার পথে। আলিবর্দি খাঁ কম চেষ্টা করেননি তাদের
পরাস্ত করতে। এবার তিনি কূটকৌশলের আশ্রয় নিলেন। আলোচনা করার জন্য ২১ জন বর্গিসহ ভাস্কর
পণ্ডিতকে আমন্ত্রণ জানান নিজের তাঁবুতে। আমন্ত্রণ রক্ষা করতে এলে তাদের ওপর অতর্কিত
আক্রমণ চালায় নবাবের লোকেরা। ভাস্কর পণ্ডিত মারাও যান, কিন্তু লাভের লাভ কিছু হলো
না। কিন্তু এত কিছু করেও বর্গিদের টলানো যায়নি। পরে রঘুজি ভোঁসলে নিজেই বাংলা
আক্রমণ করেছিলেন। দুর্ধর্ষ বর্গিরা কিছু সময়ের জন্য পিছু হটলেও বাংলা ছাড়ে নি তারা,
ঘুরে ঘুরে চালাতে থাকে তাদের দস্যুবৃত্তি। এভাবে ১৭৪২ থেকে শুরু করে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত
বর্গিদের উৎপাতে মানুষ তটস্থ ছিল। অবশেষে একরকম ‘ত্যাগ’ স্বীকার করেই তাদের দূর করতে হয়েছে বাংলা থেকে। ১৭৫১ সালে এক চুক্তির
অংশ হিসেবে আলিবর্দি খাঁ বর্গিদের হাতে উড়িষ্যা ছেড়ে দেন। আর এর মদ্ধ দিয়েই বাংলা
থেকে দূর হয় একটা অভিশাপের। কিন্তু এই নয় বছরে যে ত্রাস তারা চালিয়েছিল, সে জন্য তাদের
নামে লেখা লোকগানটা পাকাপাকিভাবে ঠাঁই পেয়ে যায় এ অঞ্চলের ইতিহাসেই।
লাটে ওঠার জোগাড়, মানুষ না খেতে পেয়ে মরার পথে। আলিবর্দি খাঁ কম চেষ্টা করেননি তাদের
পরাস্ত করতে। এবার তিনি কূটকৌশলের আশ্রয় নিলেন। আলোচনা করার জন্য ২১ জন বর্গিসহ ভাস্কর
পণ্ডিতকে আমন্ত্রণ জানান নিজের তাঁবুতে। আমন্ত্রণ রক্ষা করতে এলে তাদের ওপর অতর্কিত
আক্রমণ চালায় নবাবের লোকেরা। ভাস্কর পণ্ডিত মারাও যান, কিন্তু লাভের লাভ কিছু হলো
না। কিন্তু এত কিছু করেও বর্গিদের টলানো যায়নি। পরে রঘুজি ভোঁসলে নিজেই বাংলা
আক্রমণ করেছিলেন। দুর্ধর্ষ বর্গিরা কিছু সময়ের জন্য পিছু হটলেও বাংলা ছাড়ে নি তারা,
ঘুরে ঘুরে চালাতে থাকে তাদের দস্যুবৃত্তি। এভাবে ১৭৪২ থেকে শুরু করে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত
বর্গিদের উৎপাতে মানুষ তটস্থ ছিল। অবশেষে একরকম ‘ত্যাগ’ স্বীকার করেই তাদের দূর করতে হয়েছে বাংলা থেকে। ১৭৫১ সালে এক চুক্তির
অংশ হিসেবে আলিবর্দি খাঁ বর্গিদের হাতে উড়িষ্যা ছেড়ে দেন। আর এর মদ্ধ দিয়েই বাংলা
থেকে দূর হয় একটা অভিশাপের। কিন্তু এই নয় বছরে যে ত্রাস তারা চালিয়েছিল, সে জন্য তাদের
নামে লেখা লোকগানটা পাকাপাকিভাবে ঠাঁই পেয়ে যায় এ অঞ্চলের ইতিহাসেই।
এছারাও উত্তর ভারতের সবচেয়ে
নৃশংস ও ভয়ংকর গোপন খুনিদের দল ছিল ঠগি। এরাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকরতম গোপন খুনিদের
দল। জানা যায় বাংলায় তাদের আগমন ঘটে ১২৯০ সালের দিকে। ভারতবর্ষের বহুল আলচিত বর্বর
ঠগি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ https://advut365.blogspot.com/2020/05/thuggees-advut-365.html
নৃশংস ও ভয়ংকর গোপন খুনিদের দল ছিল ঠগি। এরাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকরতম গোপন খুনিদের
দল। জানা যায় বাংলায় তাদের আগমন ঘটে ১২৯০ সালের দিকে। ভারতবর্ষের বহুল আলচিত বর্বর
ঠগি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুনঃ https://advut365.blogspot.com/2020/05/thuggees-advut-365.html
0 comentários:
Post a Comment